খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর

 

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
অথবা, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যে সাম্প্রতিক ভেজাল মিশ্রণে প্রবণতা বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনা কর ।

প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার
সরেজমিনে পরিদর্শন : ‘ক’, ‘খ’ প্রতিষ্ঠান এবং ‘গ’, ‘ঘ’ বাজার
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ১২:০০ টা থেকে দুপুর ২:০০টা
তারিখ : ২৩-০৩-২০২৩
সংযুক্তি : ভেজালযুক্ত পণ্যের ছবি - ৪টি।


খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার
বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে খাদ্য গ্রহণ করতে হয় । খাদ্য মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে এবং সুস্থতা দান করে । তাই খাদ্য হতে হয় টাটকা, পুষ্টিকর ও নিরাপদ। কিন্তু বর্তমানে এক শ্রেণির স্বার্থান্ধ ও অর্থলোলুপ মানুষ খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে মানুষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলছে । বাজার থেকে ক্রয় করে আনা প্রায় প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যেই ভেজাল মেশানো থাকে । সাধারণত ভেজাল বলতে বোঝায় খাদ্যে নিম্নমানের, ক্ষতিকর, অকেজো ও অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মিশ্রিত করাকে । বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যে এমনভাবে ভেজাল মেশানো হয় যে, মানুষ আসল ও নকল দ্রব্যের পার্থক্য বের করতে পারে না ।

খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের সাম্প্রতিক অবস্থা
বর্তমানকালে বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজাল ও বিষক্রিয়া যেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে তাতে করে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে । বিষাক্ত এসব খাবার গ্রহণের ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে দেশবাসী । খাদ্যে ভেজালের কারণে মানুষ ১২ থেকে ১৫টি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে । বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহারে মানুষের মৃত্যুহার বাড়ছে । সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে যে, প্রায় অর্ধেক সবজি এবং এক-চতুর্থাংশ ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষতিকর কীটনাশকের উপস্থিতি রয়েছে । ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির ১৫ সদস্যের একটি দল Food and Agriculture Organisation (FAO)-এর সহায়তায় রাজধানীর গুলশান, কারওয়ান বাজার এবং মহাখালি বাজার থেকে খাদ্যের নমুনা নিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করার পর এ তথ্য প্রকাশ করেন । এ জরিপ থেকে জানা যায়, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, মাছ, ফল এবং সবজির ৮২টি নমুনার প্রায় ৪০ শতাংশ খাদ্যেই বিভিন্ন নিষিদ্ধ কীটনাশক রয়েছে । এসব কীটনাশকের মধ্যে রয়েছে ডিডিটি, অ্যালড্রিন, ক্লোরডেইন ও হেপ্টাক্লোর । প্রায় ৫০% সবজি এবং ৩৫% ফল ক্ষতিকর মাত্রার কীটনাশক দ্বারা দূষিত হয় । জরিপকারী দল হলুদের গুঁড়ার ৩০টি নমুনা গবেষণা করে দেখেন যে, এগুলোতে সিসা জাতীয় রং নিহিত আছে, যা খেলে বা নিঃশ্বাসের সাথে নিলে প্রাণনাশ হতে পারে।

ফুড সেফটি ল্যাব দ্বারা উদ্ভাবনকৃত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তরলের মিশ্রণ পৃথকীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে ৬৬টি নমুনায় ফরমালডিহাইড-এর উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য গবেষণা করা হয় । এ পদ্ধতিতে ধনিয়া, আম এবং তাজা চিংড়ি মাছের নমুনায় ভেজাল পাওয়া গেছে । পাস্তুরিত দুধে উচ্চমাত্রায় অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে, যা উৎপাদনকারী অনুসৃত নিম্নমানের প্রক্রিয়া প্রণালি নির্দেশ করে । শসা এবং রাস্তার খাবারের নমুনায়ও উচ্চমাত্রার অণুজীব প্রদর্শন করে, যা পানি সরবরাহে ব্যাপক দূষণ চিহ্নিত করে । সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)-এর তথ্য অনুসারে ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করার কারণে ২০১০ সালে মৃত্যুহার ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ, যা বর্তমানে আরও বেড়েছে । ২০১৫ সালে গোপালগঞ্জ ও সিলেটে প্রায় ৯১ জন মানুষ ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.