তোমার কলেজের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : বিশেষ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : আবদুল কাদের মোল্লা কলেজ : একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ
প্রতিবেদনের লক্ষ্য : কলেজের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্ৰহ
সরেজমিনে পরিদর্শন : আবদুল কাদের মোল্লা কলেজ
প্রতিবেদন তৈরির সময় : সকাল ১১:০০টা
তারিখ : ২২-০৩-২০২৩
সংযুক্তি : কলেজের অভ্যন্তরীণ ৫টি ছবি
আবদুল কাদের মোল্লা কলেজ : একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ
নরসিংদী
জেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আবদুল কাদের মোল্লা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৬
সালে । অতি অল্প সময়ের মধ্যেই কলেজটি দেশের শীর্ষস্থানীয়
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে । প্রতিবছর বিজ্ঞান,
মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার প্রায় বারো'শ এর অধিক শিক্ষার্থী এইচএসসি
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে । প্রতিবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী A+ পায়
এবং পাশের হার শতভাগ । এই কৃতিত্বের পেছনে যে বিশেষ কারণ রয়েছে তা নিম্নে
উপস্থাপন করা হলো—
১. শহরের কিছুটা দূরে সম্পূর্ণ নিরিবিলি ও
প্রাকৃতিক পরিবেশে এ কলেজটি অবস্থিত । কলেজের সামনে বিস্তৃত মাঠ, তার
চতুর্দিকে রয়েছে বাউন্ডারি । আর বিভিন্ন গাছের সারি । ভেতরের দিকে রয়েছে
নানা জাতের ফুলগাছ । বিভিন্ন ফুল যখন বাগানে ফুটে তখন খুবই সুন্দর দেখায় ।
দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। এমন মনোরম ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ শিক্ষার জন্য
সত্যিই অনেক উপকারী ।
২. কলেজটির
তিন দিকে তিনটি দোতলা বিল্ডিং। এতে মোট ত্রিশটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি অফিস
কক্ষ এবং অধ্যক্ষের জন্য আলাদা একটি কক্ষ রয়েছে । এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের
জন্য একটি কমনরুম ও লাইব্রেরি রয়েছে । এছাড়াও বিজ্ঞানাগার ও একটি
ডিবেটিং ক্লাব রয়েছে।
৩. প্রতিটি
শ্রেণিকক্ষের ভেতরে পর্যাপ্ত বেঞ্চ রয়েছে । ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে
শ্রেণিকক্ষগুলোতে এসি-র ব্যবস্থা করা হয়েছে । অর্থাৎ কলেজের অভ্যন্তরীণ
পরিবেশ অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ।
৪. তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা ছাত্রাবাস রয়েছে। সেখানে থাকা-খাওয়ার ও পড়াশোনার অনুকূল পরিবেশ বিরাজমান ।
৫.
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অগ্রগতি সাধনকল্পে একটি বিশাল পাঠাগার রয়েছে ।
এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বই রয়েছে । কার্ড দেখিয়ে নিজের
নামে বই ইস্যু করে নিয়ে যাওয়া যায় । তবে নির্দিষ্ট সময় শেষে তা আবার
ফেরত দিতে হয় । ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এ পাঠাগার সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ টা
পর্যন্ত খোলা রাখা হয় । এতে তারা এখানে বসেও পড়তে পারে ।
৬. কলেজটির
পরিবেশ রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত হওয়ায় শিক্ষার পরিবেশ এখানে অনুকূল । ফলে
শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো খারাপ অভ্যাস বা প্রবণতা গড়ে ওঠে না ।
৭.
একটি কথা প্রচলিত আছে, ‘শিক্ষকরাই মানুষ গড়ার কারিগর ।' কথাটি সত্যিই
তাৎপর্যপূর্ণ । ভালো শিক্ষার জন্য প্রয়োজন ভালো মানের শিক্ষক । কেননা
ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে শিক্ষকের ভূমিকা অনেক বেশি। শিক্ষকের আদর্শ,
নৈতিকতা, মূল্যবোধ এসবকিছুরই প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর । শিক্ষকের
অনুপ্রেরণা পেয়ে একজন খারাপ ছাত্রও অনেক মনোযোগী হতে পারে । আর এ কলেজের
প্রতিটি শিক্ষকই অত্যন্ত আন্তরিক ও বন্ধুবৎসল । তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও
আন্তরিক সহযোগিতার ফলে বরাবরই এ কলেজের আশানুরূপ ফল অর্জিত হয় ।
৮. কলেজের
পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে আনা হয়েছে
ভিন্নতা । যথাসময়ে ক্লাস শুরু হয় । নির্দিষ্ট পাঠ শেষে ক্লাসটেস্ট হয়।
কোর্স শেষে প্রত্যেক বিষয়ের মডেল টেস্ট নেওয়া হয় । যদি কোনো পরীক্ষার্থী
এতে কম নম্বর পায় তখন তাকে স্পেশাল কেয়ার করা হয় । কলেজের
ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কোচিং ও প্রাইভেট-টিউশনি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে
দেওয়া হয়। কেননা শিক্ষকরাই ক্লাসে প্রতিটি টপিক অত্যন্ত সহজ-সরলভাবে
পড়ান, যাতে সকলের বোধগম্য
হয়।
শিক্ষার্থীদের
দেহ ও মনের পূর্ণ বিকাশ সাধনের লক্ষ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক
চর্চা । যেমন— গান, নাচ ও বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয় ।
সর্বোপরি
এ কলেজের শিক্ষার পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক উপযোগী । এমন সুশৃঙ্খল ও
নিরিবিলি পরিবেশ জ্ঞানার্জনের জন্য অনুকূল । তাই এ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা
প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ ও সর্বাধিক A+ প্রাপ্তির কৃতিত্ব
অর্জন করে আসছে । আশা করি, ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে ।